Kola Superdeep Borehole

Kola Superdeep Borehole


কতই না রহস্যে ঘেরা এই পৃথিবী। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন রহস্যের উম্মোচন ঘটতেই থাকে বিভিন্ন স্থানে। এর মধ্যে কিছু বানোয়াট, কিছুর সমাধান মেলে আর কিছু সব সময় অমীমাংসিত ই রয়ে যায়। 
এইসকল রহস্যের মধ্যে একটি হলো "Kola Superdeep Borehole". এই পৃথিবীতে অনেক প্রাকৃতিক গর্ত রয়েছে, কিন্তু Kola Superdeep Borehole হলো মানব সৃষ্ট সবচেয়ে গভীরতম গর্ত। 

kola superdeep borehole

Kola Superdeep Borehole মানব সৃষ্ট সবচেয়ে গভীরতম গর্ত। 




রাশিয়ার 'Soviet Union' ১৯৭০ সালের ২৪ মে পৃথিবী পৃষ্ঠে সবচেয়ে গভীর গর্ত করার লক্ষ্যে ড্রিলিং শুরু করে। তারা মূলত এটি শুরু করে আমেরিকার "বার্থা রজার্স" হোল এর রেকর্ড ভঙ্গ করার জন্য। এই কাজটি করা হয় নরওয়ে বর্ডার এর কাছাকাছি Pechengsky ডিস্ট্রিক্ট এর কোলা পেনিনসুলা (Kola Penninsula) নামক স্থানে। বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য ছিল ১৫০০০ মিটার খনন করবে। কিন্তু ১২,২৬২ মিটার খনন করার পর, প্রজেক্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। 

১২,২৬২ মিটার খনন করতে বিজ্ঞানীদের সময় লাগে প্রায় ২০ বছর অর্থাৎ, ১৯৮৯ সালে খনন কাজ বন্ধ করা হয়। ১৯৯৫ সালে এই প্রজেক্টটি সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হয়। এই গর্তটির পরিধি ৯ ইঞ্চি বা ২৩ সেন্টিমিটার এবং গভীরতা ১২,২৬২ মিটার বা ৪০,২৩০ ফিট। এটি খনন করার জন্য প্রথমে Uralmash-4E এই যন্ত্র ব্যবহার করা হয় এবং পরবর্তীতে Uralmash-15000 সিরিজ ড্রিলিং রিগ্ ব্যাবহার করা হয়।


এই গর্ত খনন করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক কিছুর সন্ধান পান। তার মধ্যে একটি হলো প্রচুর পানি যা মাটির নিচে থাকা খনিজ পদার্থ থেকে সৃষ্টি হতো। সেখানে অনেক ধরনের গ্যাস ও বিদ্যমান ছিল। সেখানে বিপুল পরিমাণে হাইড্রোজেন গ্যাস পাওয়া যায় যা অবাক করার মতো ছিল। তারপর তারা পান বিভিন্ন জীব। শুনতে অবাক করার মতো হলেও এটাই সত্য। মাটির এত গভীরে কোনো জীবের বসবাস সম্ভব না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা গর্তটির ৬,৭০০ মিটার গভীরে নানান microscopic plankton এর খোঁজ পান।


সর্বশেষ তারা পান উষ্ণতা (Heat)। আর এটিই মূলত প্রজেক্টটি বন্ধ হওয়ার কারণ ছিল। বিজ্ঞানীরা ভেবেছিল ভেতরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হবে, কিন্তু সে তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ। গর্তটি খনন এর জন্য যে Uralmash-15000 ড্রিলিং রিগ ব্যাবহৃত হচ্ছিলো তা এমন ভাবে গলতে শুরু করে যেমনটি আগুন এর কাছে প্লাস্টিক গলে। এছাড়াও সেখানে অনেক শক্ত পাথর ছিল যা ড্রিলটিকে বেকিয়ে দিচ্ছিল। বিজ্ঞানীরা জানান এইসব বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয়েই প্রজেক্টটি বন্ধ করা হয় এবং সেই জায়গাটিকে ২০০৮ সালে সিল করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ ২০ বছর খনন করার পরও পৃথিবীর কেবল ০.২% গভীরে যাওয়া সম্ভব হয়েছে মানুষের দ্বারা।


এখন এরকম প্রশ্ন জাগতে পারে এই পুরো ঘটনাতে রহস্যের কি আছে? 

অনেকেই মনে করেন এই প্রজেক্ট এর কিছু তথ্য জনগন এর কাছ থেকে লুকানো হয়েছে। বিজ্ঞানীরা গর্ত থেকে পানি, গ্যাস, জীব ও উষ্ণতা ছাড়াও আরেকটা জিনিস পান আর তা হলো শব্দ। বিজ্ঞানীরা খনন এর সময় ড্রিল এর সাথে মাইক্রোফোন লাগিয়ে দেন যাতে করে তারা মাটির গভীরের শব্দ শুনতে পারেন। কিন্তু যখন তারা শব্দ গুলো শুনতে পান তখন তারা হতভম্ব হয়ে যান। কারণ শব্দ গুলো শুনে মনে হচ্ছিল অনেক মানুষ এর চিৎকার ও আর্তনাদ, জানোয়ার এর আওয়াজ এবং রাক্ষস এর হাসি। অনেকগুলো মানুষকে এক সাথে টর্চার করলে যেরকম আর্তনাদ শোনা যায় ঠিক তেমনটি শোনা যাচ্ছিল সেই রেকর্ডিং এ। অনেকই বিশ্বাস করে পৃথিবীর অভ্যন্তরে রয়েছে নরক বা জাহান্নাম। আর এই গর্তটি করার মাধ্যমে তারা সেখানেই অগ্রসর হচ্ছিলো। তাই তারা ভীত হয়ে প্রজেক্টটি বন্ধ করেন এবং এই তথ্যকে ধামা চাপা দেওয়া হয়। এই ধরনের শব্দ পাওয়ার কারণে এই গর্তটিকে "The Well of Hell" ও বলা হয়। 

2 comments:

Mansa Musa

✱ বর্তমান আধুনিক বিশ্বে কোনো ধনোকুপ এর কথা উঠলে সবাই বিল গেটস, জেফ বেজোজ অথবা ইলন মাস্ক এর কথা বলবেন যাদের অর্থের সঠিক কোনো হিসাব নেই। কিন্ত...

Powered by Blogger.